রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪

সম্পূর্ণ খবর

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ | EXCLUSIVE: স্পোর্টস অ্যাকাডেমি থেকে চাকরি, দিদির উন্নয়নের জোয়ার আনব বহরমপুরে: ইউসুফ

Pallabi Ghosh | ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১১ : ৫৫Pallabi Ghosh


পল্লবী ঘোষ, বহরমপুর: খেলার মাঠ থেকে রাজনীতির দুনিয়া। নতুন নয়। তবে রাজনীতিতে পা রেখেই ২৫ বছরের সাংসদ, পোড়খাওয়া রাজনীতিকের প্রতিপক্ষ হিসেবে লড়াই, নিঃসন্দেহে শোরগোল ফেলারই মতো। লোকসভা নির্বাচনের আগে ব্রিগেডে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে, রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় ফেলেছিল বহরমপুরে তৃণমূল প্রার্থী ইউসুফ পাঠানের নাম।

* বিজেপি শাসিত গুজরাট ছেড়ে বাংলায় এসে রাজনীতিতে কেন যোগ দিলেন?
ইউসুফ: গুজরাট আমার জন্মভূমি। ওখানে বেড়ে উঠেছি। আর বাংলা আমার কর্মভূমি। বাংলায় মমতা ব্যানার্জির কারণে উন্নয়ন প্রচুর হয়েছে। বহরমপুরে সেই উন্নয়নের জোয়ার পৌঁছে দিতেই এখানে আসা। এখানকার মানুষ পরিবর্তন চাইছেন। তাঁদের দেখে আমার মনে হচ্ছে, সিদ্ধান্তটা সঠিক নিয়েছি।

* বিজেপি তো আপনাকে আগে প্রস্তাব দিয়েছিল...
ইউসুফ: অতীতের কথা ভাবার অবকাশ নেই। ভাবতেও চাই না। এখানে যখন এসে পড়েছি, তখন আগামীর দিকেই আমার নজর। ইনশাল্লাহ, সাংসদ হয়ে গেলে কাজের চাপ বাড়বে। আপাতত সেদিকেই খেয়াল। তাই অতীত ঘেঁটে লাভ নেই।

* তৃণমূল কংগ্রেসকে কেন বেছে নিলেন?
ইউসুফ: তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ভারতের এমন একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী যাঁর লড়াইটা দেখে আমি অনেক কিছু শিখছি। এখনও পায়ে হাওয়াই চটি পরে ঘুরে বেড়ান। ছোট্ট ঘরে থাকেন। কখনও ধর্মে ধর্মে, মানুষে মানুষে বিভাজন ঘটান না। এমন একজন রাজনীতিককে সম্মান না করে থাকা যায় না। তাঁর জন্যেই তৃণমূলকে বেছে নিয়েছি।

* ক্রিকেট আর রাজনীতি, দুটো আলাদা জগৎ। একসঙ্গে সামলানো কঠিন হবে বলে মনে হচ্ছে না?
ইউসুফ: আমি অবসর নিয়েছি। কিন্তু এখনও বাইরে লিগে খেলতে যাই। আমার বিশ্বাস, দুটোই দুর্দান্তভাবে সামলাতে পারব। পরিবার সামলেও তো বাইরের কাজ করা যায়। এখন পরিবারটা বড় হয়ে গেছে, এই যা। বহরমপুর এখন আমার আরেকটা পরিবার। ক্রিকেট খেললেও পরিবারকে অবহেলা করব না।

* রাজনীতিতে আসার জন্য অনুপ্রেরণা কে জুগিয়েছিলেন?
ইউসুফ: প্রথমে তো বলব, মমতা ব্যানার্জি আর অভিষেক ব্যানার্জির নাম। রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্তের কথা পরিবারে জানানোর পর, সকলের সমর্থন পেয়েছিলাম। আর ছোট থেকেই দেখেছি, বাবা, মা সবসময় সকলের পাশে থেকেছেন। কারও দুঃসময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। বিপদের সময় মানুষের পাশে থাকলে, দুয়া পাওয়া যায়। বাবা, মায়ের এই আদর্শ, জীবনযাপন দেখেই তো বড় হয়েছি। এখন বহরমপুরের মানুষের রোটি, কাপড়া অউর মাকানের অভাব পূরণ করতে চাই।

* কলকাতা দেখেছেন। বহরমপুর সেই তুলনায় ছোট শহর। কী কী বদলাতে চান?
ইউসুফ: কলকাতা অনেক বড় শহর। আর বহরমপুর মফস্বল। এখানে এসে দেখেছি, অনেকের স্বপ্ন খেলা নিয়ে ভবিষ্যৎ গড়ার। তাই স্পোর্টস অ্যাকাডেমির চিন্তাভাবনা করেছি। যাতে এখানে শিখে রাজ্যের পাশাপাশি দেশের জন্যেও খেলতে পারেন বহরমপুরের খেলোয়াড়রা। খেলার হাত ধরে বহরমপুরের নাম দেশে ছড়িয়ে পড়ুক, তার চেষ্টা করব। বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য শিল্পে কাজের সুযোগ আরও বাড়ানোর চেষ্টা করব। তাছাড়া সিল্ক, জুট এবং শিল্পের অগ্রগতির জন্যেও অনেক পরিকল্পনা করেছি।

* বহরমপুরকে বলা হয় "অধীর-গড়"। ৪ জুনের পর সেটা কি "পাঠান-গড়" হবে?
ইউসুফ: প্রতিপক্ষকে সম্মান করি। কিন্তু বহরমপুরবাসীরা এবার পরিবর্তন চাইছেন। এমন একজন সাংসদকে চাইছেন, যিনি সকলের সমস্যার কথা শুনে, তাঁদের পাশে দাঁড়াবেন। প্রচারে বেরিয়ে অনেক অভিযোগ শুনছি। সেগুলো মাথায় রেখে লড়াইটা করছি। জনতার সমর্থন তো রয়েইছে, পাশাপাশি, দলের সব সৈনিক, নেতাও পাশে আছেন। আমার মতো সকলেই লড়ছেন। যুদ্ধের ময়দানে দলের সৈনিকরা এত পরিশ্রম করলে, প্রতিপক্ষের শক্তিশালী রাজারও টিকে থাকা মুশকিল।

* ক্রিকেট আর রাজনীতিতে কী মিল খুঁজে পেলেন?
ইউসুফ: দুটো আলাদা ময়দান। দুটোতেই জয়ের জন্য টিম ওয়ার্কের প্রয়োজন। কিন্তু রাজনীতির ময়দানটা অনেক বড়। টিমটাও বড়। তাই লড়াইটা অন্যরকম।

* আপনি প্রার্থী হওয়ার পর আপনার দলের এক বিধায়ক ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। রাজনীতিতে এসেই এমন আবহে মানিয়ে নিলেন কীভাবে?
ইউসুফ: প্রতিটি টিমেই এমন ঘটনা ঘটে। তবে সকলের একটাই লক্ষ্য, দলকে জেতানো। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে কখনও কখনও ঝামেলা হয়। আমার মতে, সেটা পরিবারের অন্দরেই মেটানো উচিত। আমরা প্রত্যেকেই মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। সেটার জন্যই একসঙ্গে লড়ে যাচ্ছি।

* যদি আপনি হেরে যান, রাজনীতি ছেড়ে দেবেন?
ইউসুফ: আমি হারবই না। যে ভালবাসা এখানকার মানুষের থেকে পাচ্ছি, দুয়া পেয়েছি, তাতে দুনিয়ার কোনও যুদ্ধেই হারব না। সন্তান জন্মানোর পর বাবা-মা আশীর্বাদ করেন। আমি যখন খেলতে যেতাম, তখন ঘর থেকে বেরোনোর সময় বাবা-মাও সফল হওয়ার জন্য দুয়া করতেন। বহরমপুরে এখনও পর্যন্ত যতজনের সঙ্গে দেখা করেছি, সকলেই প্রাণভরে আশীর্বাদ করছেন। এখানে পা রাখার পর থেকে একবারও নিজেকে বহিরাগত মনে হয়নি। তাই আমি ভীষণ আশাবাদী।




বিশেষ খবর

নানান খবর

নানান খবর





রবিবার অনলাইন

সোশ্যাল মিডিয়া



04 24